মৌসুম শেষের আগে লবণের ন্যায্যমূল্যে দাম পেয়ে খুশি কক্সবাজারের লবণ চাষীরা


লবণ বিক্রি করছে চাষীরা

২১ মার্চ ২০২৩ ইং
স্টাফ রিপোর্টার

স্টাফ রিপোর্টার 


কক্সবাজারের লবণ চাষিরা মৌসুম শেষ হওয়ার আগে থেকে লাভের মুখ দেখে মহা খুশিতে চাষিরা। গত মৌসুমে ও ভালো লাভ থাকায় এবার চাষিরা আগের চেয়ে বেশি চাষ ও পরিশ্রম করে আর সে পরিশ্রমের ফল মৌসুমের আগে থেকে পেয়ে মহা খুশিতে চাষিরা। গত মৌসুমের চেয়ে ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে এবার। প্রতি মণ লবণ মাঠেই বিক্রি হচ্ছে  ৪৮০ টাকা থেকে ৫৬০ টাকায়। আর এই দামে কক্সবাজার এর হাজার হাজার লবণ চাষি পরিবার বেশ খুঁশি।  বিসিক ও লবণ চাষ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য পাওয়া যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে বাংলাদেশে ৬৪ জেলার মধ্যেই কক্সবাজার জেলায় সবচেয়ে বেশি লবণ চাষ হয়ে থাকে। কিন্তু বিগত কয়েকটি মৌসুমেই লবণ চাষিরা তাদের উৎপাদিত লবণের যথাযথ দাম পাচ্ছে । সেজন্য তাদের পক্ষে বিপুল পরিমাণ লবণও বিক্রি করা সম্ভব হয়ে উঠেছে। ফলে মাঠেই কোনো কোনায় লবণ পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে না। অন্যান্য বারের চেয়ে এবার  অধিকাংশ মাঠে চাষ হয়েছে। চলতি মৌসুমে শুধু লবণ জমিই নয়, ধান চাষের জমিতেও লবণ চাষের জন্য চাষিদের মধ্যে কাড়াকাড়ি চলেছিল। আর মাঠের লবণ মাঠেই বিক্রি হয়ে যেতে শুরু হয়েছে। লবণ কিনতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পাইকারী ক্রেতারা ভিড় করতেছে চৌফলন্ডীতে,ঈদগাঁও ও কক্সবাজারের বিভিন্ন লবণ চাষের জায়গা গুলোতে। লবণ চাষিরা এবার লাভের মুখ দেখতেছে ভালো আর এটাতে  মহা খুঁশি চাষিরা। গত মৌসুমের চেয়ো ভালো দাম পাচ্ছে এই মৌসুমে। এবার বেশ ভালো দামে কক্সবাজারের হাজার হাজার লবণ চাষি পরিবার  বেশ খুশিতে। বিগত বেশ কয়েক বছর আগে  চোরাই পথে মিয়ানমার ও ভারত থেকে লবণ আসত এবং সরকার বিদেশ থেকে লবণ আমদানি করত তাতে বিপুল পরিমাণ দেশীয় লবণ অবিক্রিত থেকে যেত। কিন্তু চলতি বছর ও কয়েক গত  মৌসুমে এই পরিস্থিতি না থাকায় লবণের যথাযথ মূল্য পাচ্ছেন চাষিরা। আর লবণের বাজারমূল্য বাড়ায় এবার লবণ উৎপাদনের দিকে চাষিরা ঝুঁকছেন। পরিষ্কার সাদা লবণের চাহিদা বেশি থাকায় চাষিরা সনাতন পদ্ধতি বাদ দিয়ে আধুনিক পদ্ধতিতে মাঠে পলিথিন ব্যবহার করে লবণ চাষ করছিল। অর্থাৎ আগে যেখানে কানি প্রতি ২ মণ লবণ উৎপাদিত হত! এখন সেখানে সাড়ে ৩ থেকে ৪ মণ লবণ উৎপাদন হচ্ছে। বাড়তি লবণ উৎপাদন এবং যথাযথ দাম পেয়ে লবণ চাষি, জমির মালিক, বিক্রেতা ও স্থানীয় দালালরা বেশ খুঁশিতে উৎসবের মেতে উঠেছে।

বর্তমানে মণপ্রতি লবণ বিক্রি হচ্ছে ৪৮০ থেকে ৫৬০ টাকায়।

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের (বিসিক) কক্সবাজার কার্যালয় থেকে এখন ও চলতি মৌসুমের প্রাপ্ত তথ্যে নেওয়া হয়নি , কিন্তু গত মৌসুমে ৯ উপজেলায় ৬৬ হাজার ২৯১ একর জমিতে ২৩ লাখ ৮৫ হাজার মেট্টিক টন লবণ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত কক্সবাজার জেলায় লবণ উৎপাদিত হয়েছে ২ লাখ ৯০ হাজার ৩৪৭ মেট্রিক টন। কক্সবাজার উপকূলে দৈনিক অন্তত ১০ হাজার মেট্রিন টন লবণ উৎপাদিত হয়েছিল। গত মৌসুমে কক্সবাজার জেলার ৯ উপজেলায় ৬৬ হাজার একর জমিতে লবণের চাষ করা হয়েছিল, অন্যান্য মৌসুমের তুলনায় যা ৩ হাজার একর বেশি। এবার প্রতি মণ লবণ বিক্রি হচ্ছে গড়ে ৪৮০ থেকে ৫৬০ টাকায়। লবণের ন্যায্যমূল্য পেয়ে খুশি জেলার অন্তত ৩৫-৪৫ হাজার প্রান্তিক চাষি। 

লবণ উৎপাদন ও দাম প্রসঙ্গে চৌফলন্ডীর লবণ ব্যবসায়ী মোস্তফা সরয়ার বলেন, চাষিরা উৎপাদিত লবণের ন্যায্য মূল্য পেয়ে উৎসবের আমেজে মেতে উঠেছে। ধান চাষাবাদ জমিতে ধান চাষ বাদ দিয়ে অনেকে লবণ চাষ করায় লবণ চাষাবাদের জমির পরিমাণও বেড়েছে। ফলে চলতি বছর লক্ষ্যমাত্রার অধিক লবণ উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে চাষীদের যাবতীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা করে যাচ্ছি। এতে করে ব্যবসায়ীরাও লাভবান হচ্ছে। আজকে চৌফলন্ডী এলাকার কয়েকজন চাষীর সাথে কথা বলে জানতে পারি, এবছর প্রচুর দাম লবণের। প্রতি ৩-৪দিন অন্তর মাঠ থেকে লবণ উৎপাদিত হচ্ছে। এভাবে থাকলে মৌসুম শেষ পর্যন্ত ভালো লাভবান হবেন চাষিরা।চাষিদের একমাত্র দাবী, শুধু বিদেশ থেকে লবণ আমদানি বন্ধ রাখতে হবে সরকারের । এতে দেশীয় লবণে ভরপুর হবে এমনকি বিদেশেও রপ্তানী করা সম্ভব হবে। 

এবছর লবণের দাম ভালো আছে। এভাবে প্রতিবছর দাম ঠিক থাকলে প্রায় চাষী লবণ চাষী ও ব্যবসায়ীরা আগ্রহ করবে।


মুক্তির ৭১/নিউজ /ওমর