বিদ্যুৎসহ সবকিছুর ব্যবহারে কঠোর সংযমী হোন : প্রধানমন্ত্রী


সংসদে বক্তব্য দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

০৫ জুন ২০২৩ ইং
নিউজ ডেস্ক

নিউজ ডেস্কঃ 



জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীকে বিদ্যুৎসহ সব জিনিস ব্যবহারে কঠোর সংযম বজায় রাখার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, বিশ্বের এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতি কতদিন স্থায়ী হবে তা কেউ বলতে পারে না।

সরকার প্রধান বলেন, ‘আমাদের খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে। আমাদের চেষ্টা করতে হবে। পৃথিবীতে এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতি কতদিন চলবে তা কেউ বলতে পারে না। হয়তো বিশ্ব পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। তবে, আমরা আমাদের দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সবকিছু করছি।

তিনি আরও বলেন, আমরা বাংলাদেশে আমাদের সেরাটা করছি।

সংসদে ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য আফছারুল আমীনের মৃত্যুতে আনীত শোক প্রস্তাবে অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল রোববার ৪ জুন সংসদে এ কথা বলেন।

বর্তমান অস্থির বিশ্ব পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন ।

শেখ হাসিনা বলেন, খাদ্য সংকট, মূল্যস্ফীতি, পরিচালনা ও পরিবহন ব্যয়, বিদ্যুতের ঘাটতি বিশ্বের প্রতিটি মানুষের জীবনকে অসহনীয় করে তুলেছে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, করোনা মহামারীর ফলে সারা বিশ্বে খাদ্য সংকট, মূল্যস্ফীতি, পরিচালনা ও পরিবহন ব্যয়, বিদ্যুতের ঘাটতি এবং তার ওপর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ প্রতিটি মানুষের জীবনকে অসহনীয় করে তুলেছে।

 তিনি বলেন, সরকার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী শতভাগ মানুষের ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে।

বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেল, কয়লা বা গ্যাসের সংকট চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন জ্বালানি কেনা খুবই কঠিন। অনেকটা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তারপরও আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

সরকার কাতার ও ওমানের সাথে জ্বালানি ক্রয়ের চুক্তি করেছে উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, ‘ইতিমধ্যে কয়লা কেনার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যাতে আমরা বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো পুনরায় চালু করতে পারি।

তিনি আরও বলেন, সরকার জলবিদ্যুৎ আমদানির ব্যবস্থাও নিয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, দেশ আর্থ-সামাজিকভাবে এগিয়ে যাওয়ায় স্বাধীনতার সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা নিষেধাজ্ঞা, বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি ও জ্বালানি তেল সংকটের কারণে শুধু বাংলাদেশ নয়, উন্নত দেশগুলোও হিমশিম খাচ্ছে।

বঙ্গবন্ধু কন্যা আরও বলেন, ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে জ্বালানি ঘাটতি রয়েছে। আছে লোডশেডিং বা বিদ্যুতের সীমিত ব্যবহার। খাবার থেকে শুরু করে সব কিছুর দাম বেড়েছে। এমনকি উন্নত দেশগুলোতেও অনেক লোক তাদের চাকরি হারাচ্ছে।

 বিশ্বব্যাপী একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি অব্যাহত রয়েছে উল্লেখ কওের তিনি বলেন, “আমি জানি না আগে কখনো এমন হয়েছে কিনা। হতে পারে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর দুর্ভিক্ষ হয়েছিল।”

আফসারুল আমিনের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি ছাত্রজীবন থেকেই ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

“তিনি (আফসারুল আমিন) প্রতিটি সংগ্রামে ভূমিকা রেখেছেন। তিনি একজন নিবেদিত প্রাণ মানুষ ছিলেন। তার দলের প্রতি তার নিষ্ঠা ও সততা অতুলনীয় ছিল। তিনি মন্ত্রী হিসেবেও দারুণ সাফল্য  দেখিয়েছেন।”

 আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, শিক্ষা উপমন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী, ওয়াসেকা আয়শা খান, মোতাহার হোসেন ও নুরুল ইসলাম নাহিদসহ জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু ও মসিউর রহমান রাঙ্গা বক্তব্য রাখেন।

পরে সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য আফসারুল আমিনের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়।

সংসদে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।

পরে এক মিনিট নীরবতা পালন ও মোনাজাত করা হয়।

সূত্র-বাসস