কুলিয়ারচর (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি:
পরিবারে স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে সাত বছর আগে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন ২৪ বছরের টগবগে যুবক মো. মনির হোসেন। প্রবাস জীবনে দীর্ঘ ৭ বছর কাজ করার পর হঠাৎ ব্রেইনস্টোক করে প্রবাস জীবনের ইতি টানেন লাশ হয়ে। মনিরের লাশ তাঁর গ্রামের বাড়িতে আসলে স্বজন ও প্রতিবেশীদের বুকফাঁটা কান্না আর আহাজারিতে বাড়ির আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠে।
মনির হোসেন কিশোরগঞ্জ জেলার কুলিয়ারচর উপজেলার সালুয়া ইউনিয়নের মধ্য সালুয়া পশ্চিম পাড়া গ্রামের কাবিল হাজী বাড়ির মো. বরজু মিয়ার পুত্র ও সালুয়া ইউনিয়ন প্রবাসী ঐক্য পরিষদের সহ-সভাপতি মো. আবুল হোসেন লিটনের ছোট ভাই।
৭ বছর আগে পরিবারে স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনার বুক ভরা আশা নিয়ে মা-বাবা, ভাই-বোন ছেড়ে অল্প বয়সে সৌদি আরবে পাড়ি জমান মো. মনির হোসেন। সেখানে হাঁড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে সাত বছর ভালোই কাটছিল এবং আয় রোজগারও হয়েছিল ভালো। কিন্তু বিধাতার কি নির্মম পরিহাস, মনির দেশে ফেরার সময় গনিয়ে আসার সাথে সাথে গত ২৬ আগস্ট হঠাৎ ব্রেইনস্টোক করে। পরে অসুস্থ অবস্থায় তাকে সৌদি আরবের একটি হাসপাতালে নেওয়া হলে ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন ২৭ আগস্ট মৃত্যু বরণ করেন সে। মৃত্যুর পর সৌদি সরকারের নিয়মনীতি ও আইনি প্রক্রিয়া শেষে ১৬ দিন পর গত ১৩ সেপ্টেম্বর বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে মনিরের মরদেহ তার বাড়িতে আসে।
মরদেহ বাড়িতে আসার সাথে সাথে মা-বাবা, ভাই-বোন ও আত্মীয় স্বজনসহ প্রতিবেশীদের বুক ফাঁটা কান্না আর আহাজারিতে বাড়ির আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠে।
মনিরের পরিবারের কয়েকজন বলেন, সে সৌদি আরবে ভালো সুযোগ সুবিধায় ছিল এবং নিজে একটা গাড়িও কিনেছিল।
তারা আরো জানান, গাড়ি কিনে বাড়িতে ফোন করে বলেছিলেন সে তার বড় ভাই আবুল হোসেন লিটনকে সৌদি আরবে নিয়ে তাকে গাড়ি চালানোর কলাকৌশল শিখিয়ে দিয়ে কিছুদিনের মধ্যে দেশে আসবে।
মনির দেশে আসবে এই কথা শুনে নববধূ ঘরে আনবে এমন স্বপ্ন বুকে নিয়ে মা-বাবা আত্মীয় স্বজনরা বউও খুঁজতে থাকে আদরের ছেলে মনিরের জন্য। কিন্তু মা-বাবার সেই আশা পূরণ হল না।
তারা বলেন, মনির দেশে ফিরেছে ঠিকই কিন্তু মনির হয়ে নয়, লাশ হয়ে, মা-বাবার বুক ভরা স্বপ্ন চুড়মার করে।
মুক্তির ৭১/নিউজ /কাইসার
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ শাহিদ আজিজ
যোগাযোগ -০১৭৫৫৫১৬৯২১
ইমেইল - info@muktir71news.com